'আসমান' গল্পটি একজন প্রেমে ব্যর্থ, মাদকাসক্ত, হতাশ, বিষন্ন এবং প্রায় সর্বহারা যুবকের জীবনকে কেন্দ্র করে লেখা। গল্পের মূল চরিত্র নব্বই দশকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ওমার রিজওয়ান। এই হতাশ, বিষন্ন ওমারের জীবনে প্রত্যাবর্তনের আলো আনতে সাহায্য করেন ইমাম ইসহাক আবদুর রহমান। সেই প্রত্যাবর্তন থেকে ওমারের জীবনে শুরু হয় ইসলামের জন্য ত্যাগ, ধৈর্য এবং সংগ্রাম। ওমারের জীবনের প্রত্যাবর্তন তাকে নিয়ে যায় বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে এবং সেখান থেকে আফগানিস্তানে। সেখানে তার জীবন ঘুরে যায় এক নতুন মোড়ে এবং ওমার খুঁজে পায় ভালোবাসার মূল অর্থ।
আসমান গল্পের পাঠ প্রতিক্রিয়া–
এত এত পজিটিভ রিভিউ দেখে অনেক আশা নিয়ে বইটা শুরু করেছিলাম। সত্যি বলতে, বইটা শুরুতে বেশিদূর আগাতে পারিনি। কেমন যেন নিরস নিরস লাগছিল। কিন্তু কিছুটা আগাতেই ইমাম ইসহাক চরিত্রটাকে বেশ ভালো লাগা শুরু হয়। তাঁর সাধারণ কিন্তু অর্থবহ কথাবার্তা, তাঁর দর্শন, বোঝানোর ক্ষমতা ওমারের সাথে যে-কাউকেই কিছুটা ভাবতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়া গল্পের শেষটাও ভালো লেগেছে।
কিন্তু এই বইয়ে বেশ কিছু মিউজিক ব্যান্ডের নাম উল্লেখ করা আছে, যা আমার মোটেও ভালো লাগেনি। লেখকের লেখনী ভালো, তবে বলবো না সেটা আহামরি কিছু।
বইয়ের প্রচ্ছদ, বাঁধাই এবং ফন্ট যথেষ্ট ভালো এবং ১৬০ পৃষ্টার পেপারব্যাক বইটির নির্ধারিত মূল্য মাত্র ১০০ টাকা। এক্ষেত্রে প্রকাশনী অবশ্যই প্রসংশার দাবিদার।
'আসমান' থেকে আমার প্রিয় কিছু লাইন–
১. কখন তুমি বুঝবে যে, তোমার কাছে আল্লাহর সাহায্য আসছে? এটা তখন, যখন তুমি ধৈর্য ধরার ক্ষমতা লাভ করছো।
২. আত্মাকে যেকোনো পার্থিব লোভ-লালসা, চাওয়া-পাওয়া থেকে মুক্ত করতে পারলে যেকোনো বিচ্ছেদবেদনা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
৩. মগ ভর্তি গরম চা আর জানালার ওপাশে তুষার শুভ্র পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে তার উপলব্ধি হয়, আকাঙ্ক্ষা থেকে বেঁচে থাকার নামই স্বাধীনতা।
৪. সত্য বিশ্বাসের বাণী আসে হৃদয় থেকে। সত্য যখন কথা বলে তখন মুখ বা স্বরতন্ত্র কথা বলে না, মূলত কথা বলে তার হৃদয়, সেটা অন্য হৃদয়কে স্পর্শ করে।